বৈশাখ


দেবেন্দ্রনাথ সেন


কপালে কঙ্কণ হানি, মুক্ত করি চুল
বাসন্তী যামিনী আহা, কাঁদিয়া আকুল!
স্বামী তার, 'চৈত্রমাস', অনঙ্গের মত,
দক্ষিণে ঈষৎ হেলি, জানু করি নত,
কার তপ ভাঙিবারে করিছে প্রয়াস?
রুদ্রের মূর্তি ও যে! — এ কী সর্বনাশ!


ললাটে অনল হের, ধক্ ধক্ জ্বলে।
সর্বাঙ্গে বিভূতি-ভস্ম, মাখি কুতূহলে,
তপে মগ্ন, — চিনিলে না বৈশাখ দেবেরে?
হারাইলে প্রাণ আহা! নাশিতে জীবন,
রোষান্ধ বৈশাখ ওই, মেলিল নয়ন!


Solve by madhav 


প্রতিবেদন

বিষয়: বর্তমান ভারতের চিকিৎসা পরিকাঠামো ও নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা

ভূমিকা

ভারত, একটি বৃহৎ জনসংখ্যার দেশ হিসাবে, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিগত কয়েক বছরে ভারতের চিকিৎসা পরিকাঠামোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদানে এখনও কিছু ঘাটতি রয়ে গেছে।

বর্তমান ভারতের চিকিৎসা পরিকাঠামো

ভারতে চিকিৎসা ব্যবস্থা তিনটি প্রধান স্তরে বিভক্ত—সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা, বেসরকারি স্বাস্থ্যখাত এবং ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা (আয়ুর্বেদ, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথি)।

  1. সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র:
    ভারতের গ্রামীণ এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (PHC) এবং উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তবে, অনেক ক্ষেত্রেই এই কেন্দ্রগুলিতে ডাক্তার ও ওষুধের ঘাটতি রয়েছে।
  2. বেসরকারি হাসপাতাল:
    শহরাঞ্চলে বেসরকারি হাসপাতাল আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিষেবা প্রদান করলেও, সেগুলি সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয়বহুল।
  3. স্বাস্থ্য কর্মী:
    প্রতি 1,000 জন নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার এবং নার্সের ঘাটতি রয়েছে।
  4. প্রযুক্তি এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি:
    বড় শহরের হাসপাতালগুলি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত। তবে, গ্রামীণ এলাকাগুলিতে এখনও প্রাথমিক চিকিৎসার সুবিধাও সঠিকভাবে পৌঁছায়নি।

নাগরিকদের জন্য প্রদত্ত সুবিধা

ভারত সরকার বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার চেষ্টা করছে:

  • আয়ুষ্মান ভারত: বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প, যা দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করে।
  • জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন (NHM): গ্রামীণ এবং শহুরে অঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
  • সস্তা ওষুধ প্রকল্প: জনগণের জন্য "জন ঔষধি" কেন্দ্রের মাধ্যমে সস্তা দামে ওষুধ সরবরাহ।
  • টেলিমেডিসিন: বিশেষত COVID-19-এর পর, অনলাইন চিকিৎসা পরিষেবা জনপ্রিয় হয়েছে।

চ্যালেঞ্জ

  1. গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের বৈষম্য: গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসা সুবিধা অত্যন্ত সীমিত।
  2. চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব: প্রয়োজনের তুলনায় ডাক্তার ও নার্সের সংখ্যা কম।
  3. ব্যয়বহুল চিকিৎসা: বেসরকারি চিকিৎসা খরচ অনেক নাগরিকের সাধ্যের বাইরে।
  4. পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের অভাব: স্বাস্থ্যখাতে জিডিপি বরাদ্দ এখনও যথেষ্ট নয়।
  5. সংক্রামক রোগ: ভারতের বড় অংশ এখনও জলবাহিত রোগ ও অপুষ্টির সমস্যায় ভোগে।

সমাধান

  1. স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বৃদ্ধি: চিকিৎসা ও গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।
  2. গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রসারিত করা: আরও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন ও আধুনিকায়ন করা।
  3. মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করা: সরকারি প্রচারণা চালিয়ে নাগরিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি।
  4. ডাক্তার ও নার্সের প্রশিক্ষণ বাড়ানো: বিশেষত গ্রামীণ এলাকার জন্য দক্ষ চিকিৎসা কর্মী তৈরি করা।
  5. স্বাস্থ্য বিমা: আয়ুষ্মান ভারতের মতো প্রকল্পের আওতায় আরও মানুষকে নিয়ে আসা।

উপসংহার

ভারতের চিকিৎসা পরিকাঠামো দ্রুত উন্নতি করলেও, নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদানে আরও কাজ করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে সমন্বয়, বাজেট বৃদ্ধি, এবং সচেতনতার প্রসার এই ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। একটি সুস্থ জাতি গঠনে সর্বোচ্চ গুণগত মানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।